Close

October 15, 2017

রক্তদানের উপকারিতা

স্বেচ্ছায় নিজের রক্ত অন্য কারো প্রয়োজনে দান করাই রক্তদান। তবে রক্তদাতাকে অবশ্যই পূর্ণবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স হতে হয়।

প্রতি তিন মাস অন্তর প্রত্যেক সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারী নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে রক্তদান করতে পারেন। এতে স্বাস্থ্যে কোনো ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। তবে রক্তদানের পদ্ধতি ও পরবর্তী প্রভাব সম্পর্কে অজ্ঞতা ও অযথা    ভীতির কারণে অনেকেই রক্ত দিতে দ্বিধান্বিত হন। কিন্তু রক্তদানেরও যে উপকারিতা রয়েছে, সে কথা আমরা কয়জনই বা জানি?

উপকারিতা

• রক্তদানে কোনো সমস্যা হয় না। কেননা একজন সুস্থ মানুষের শরীরে পাঁচ-ছয় লিটার রক্ত থাকে। এর মধ্যে সাধারণত ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার রক্ত দান করা হয়, যা শরীরে থাকা মোট রক্তের মাত্র ১০ ভাগের এক ভাগ। রক্তের মূল উপাদান পানি, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পূরণ হয়।

• রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। রক্তদানের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ‘বোনম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়।

দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকা জন্ম হয়, ঘাটতি পূরণ হয়।

• বছরে তিনবার রক্তদান শরীরে লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলে ও নতুন কণিকা তৈরির হার বাড়ায়।

• নিয়মিত রক্তদানকারীর হার্ট ও লিভার ভালো থাকে।

• স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে পাঁচটি পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনা খরচে করা হয়। এর মাধ্যমে জানা যায় শরীরে অন্য বড় কোনো রোগ আছে কি না। যেমন—হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, এইচআইভি (এইডস) ইত্যাদি।

• রক্তদান অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।

• রক্তে কোলস্টেরলের উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে।

• শরীরে অতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতিকে বলে Hemochromatosis। নিয়মিত রক্তদান এই রোগ প্রতিরোধ করে।

• স্থূলদেহী মানুষের ওজন কমাতে রক্তদান সহায়ক।

• মুমূর্ষুকে রক্ত দিলে মানসিক তৃপ্তি মেলে।

রক্তদানের শর্তগুলো

• রক্তদাতাকে সুস্থ থাকতে হবে এবং

১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৪৫ কেজি ওজনের যেকোনো মানুষ রক্তদান করতে পারে।

• দাতার রক্তের স্ক্রিনিং টেস্ট বা রক্ত নিরাপদ কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা।

• ভরপেটে খাওয়ার চার ঘণ্টা পর রক্ত দেওয়া শ্রেয়।

• কোনো রূপ এনার্জি ড্রিংক রক্তদানের আগে সেবন না করাই ভালো।

• যাঁদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তদান করতে পারেন।

যাঁদের রক্তদান নিষেধ

• ক্যান্সার, হিমোফিলিয়া, ম্যালেরিয়াসহ জীবাণুঘটিত কোনো রোগী।

• এইচআইভি বা এইডস আক্রান্তরা।

• মাদক সেবনকারী।

• হেপাটাইটিস-বি ও সি-র এন্টিজেন পজিটিভ যাঁদের। পরবর্তী সময় তা নেগেটিভ হলেও রক্ত দেওয়া যাবে না।

• গর্ভবতী মহিলারা।

• যাঁদের অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হয়।

• যাঁরা বারবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন।

• গত তিন মাসের মধ্যে রক্তদান করেছেন এমন মানুষ।

• যাঁদের শরীরের কোনো স্থানের গ্ল্যান্ড (লিম্ফনোড) ফুলে গেছে। বিশেষ করে ঘাড়, গলায়, হাতের নিচের গ্লান্ড।

লেখক : কো-অর্ডিনেটর, স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন

Leave a Reply